মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :
নাবালকের সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে দু’পক্ষের মধ্যে চলছিল সংঘাত। এ নিয়ে উভয় পক্ষের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাটসহ গাছপালা নিধনের ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। এনিয়ে দু’পক্ষের দায়ের করা মামলা হয়েছে প্রায় বাইশটি।
সর্বশেষ গত ২২ মে থেকে তীব্র আকার ধারন করে দফায় দফায় সংঘর্ষ,হামালা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এক পক্ষের ভাড়াটে বাহিনীর লোকজন ওই ঘটনায় জড়িত নয়,এমন লোকজনের বাড়িতেও হামালা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা শুরু করে। এতে অশান্ত হয়ে উঠে পুরো গ্রাম। ভয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখতে হয়েছে গ্রামের অনেক ব্যবসায়ীকেও। শুধু অপেক্ষা করছিল মৃত্যু।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হলে সরেজমিন তদন্ত করে গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি আমলে নেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার নিমিত্তে,উভয় পক্ষকে ডেকে তাদের প্রত্যেককে পছন্দের উকিলসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে আপোষ মিমাংসার অনুরোধ করেন তারা।
শুক্রবার (২০-৭-১৮) উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজার কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল হাসানের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের মনোনীত উকিল,এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আপোষ মিমাংসা করা হয়। বিবাদমান জমি নিয়ে এতোদিন কেউ কারো ছায়া মাড়াননি। কিন্তু সেইদিন জমি-জমার ফয়সালাসহ বুক মিলিয়েছেন একজন আরেকজনের সাথে। সব মিলিয়ে পুরনো দ্বন্দ্বের জের মিটিয়ে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলা জোতকাদিরপুর গ্রামে।
শালিস বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন,এ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক মেয়র আক্কাছ আলী, ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুল হাসান বাবলু, সৈয়দ আলী, ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ, প্রাম প্রধান নজরুল ইসলাম, বাঘা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল লতিফ মিঞা ও সম্পাদক নুরুজ্জামানসহ উভয় পক্ষের ১০জন।
উল্লেখ্য, জোতকাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা কলিমুদ্দীনের জীবদ্দশায় বাবা ফেলু সা তার ৩ নাতি – (কলিমুদ্দীন সার ছেলে) করিম, কাদের ও বজলুকে ৪৯ শাতংশ জমি বিক্রি কবলা রেজিষ্ট্রি করে দেন। এর মধ্যে নাবালক ছিলেন কাদের ও বজলু। সাবালক করিম তার অংশের সোয়া ৭ শতাংশ জমি ফইমুদ্দিনের কাছে বিক্রি করে। পরে করিমের অংশের ৯ শতাংশ ও নাবালক দুই ভাইয়ের ৩৩ শতাংশ জমিসহ ৪২ শতাংশ জমি বিক্রি করেন এবাবাদুল্লাহ মন্ডল গংদের কাছে। নাবালক কাদের সাবালক হয়ে তার অংশের জমি বিক্রি করেন, ফইমুদ্দিন ও গোলাম মোস্তফার কাছে । বজলুও তার অংশের জমি বিক্রির জন্য বায়নানামা দলিল করে দেন ফইমুদ্দিন ও গোলাম মোস্তফাকে। মূলত দুই নাবালকের জমি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। কিন্তু কেহই সিভিল আদালতে মামলা করেননি।